ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির রাজাপুরে প্রভাব বিস্তার নিয়ে কিশোর গ্যাং এর দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষে দুইজন গুরুত্বর আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪জুলাই) বিকাল ৫টা ও ৬টার দিকে পৃথকভাবে উপজেলার বাগড়ি ও থানা সংলগ্ন এলাকায় পাইলট স্কুল মাঠের পুর্ব-দক্ষিণ কর্নারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর থেকে রাজাপুর উপজেলা জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্র জানাগেছে, প্রভাব বিস্তার নিয়ে কিশোর গ্যাং এর দুই গ্রুপের মধ্যে পূর্ব থেকেই ছোট ছোট মারামারির ঘটনা ঘটে।রাজাপুর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা আক্তার লাইজুর পুত্র জোহা ও জেলা পরিষদ সদস্য প্রার্থী লিপি বেগমের পুত্র সানির সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
পরে গত ৭ জুলাই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা আক্তার লাইজুর ছেলে জাহেদ জোহাকে শাকিল-সানি গ্রুপ হামলা চালিয়ে গুরুত্বর আহত করে। ঐ ঘটনায় পরে জোহা গ্রুপ পাল্টা হামলা চালয় শাকিল-সানি গ্রুপের আজিমের ওপর। ঐ দিনের হামলার জের ধরে বৃহস্পতিবার (১৪জুলাই) বিকাল সোয় পাঁচটার দিকে রাজাপুর পাইলট মডেল স্কুলে খেলার মাঠে শাকিল-সানি গ্রুপের ওপর জাহেদ জোহা গ্রুপ হামলা চালায়। এতে শাকিল-সানি গ্রুপের সানি গুরুত্বর আহত হয়। তাৎক্ষনিক সানিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজাপুর সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এসময় উভয় পক্ষ হাসপাতালে উপস্থিত হলে উত্তেজনা সৃষ্টির এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।
এর একটু পরে শাকিল-সানি গ্রুপ বাগড়ি বাজারে জুবায়েরকে না পেয়ে তার বাবা পানের দোকানী সাইদুলকে দোকান থেকে ধরে নিয়ে মারধর করে। এতে সাইদুল আহত হয়। এর পরে তৃতীয় দফায় বাগড়ি আলহাজ লালমোন হামিদ মহিলা কলেজের গেটে শাকিল-সানি গ্রুপ জোহা গ্রুপের ওপর হামলা চালায় এবং জোহার মোটরসাইকেল কুপিয়ে বিনষ্ট করে। এতে জোহ গ্রুপের ফাহিম নামে একটি ছেলে গুরুতর আহত হয়।
আহতরা হলো রাজাপুর উপজেলা সদর ইউনিয়নের মনোহরপুর এলাকার মো. শামিমের ছেলে মো. ফাহিম (১৮) ও মঠবাড়ি ইউনিয়নের বাদুরতলা এলাকার ও বর্তমান টিএন্ডটি রোডের বাসিন্দা মৃত আবুল কালামের ছেলে মো. সানি (১৩),। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
আহত সানির মা মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী লিপি বেগম জানান, কি নিয়ে কি জামেলা তা আমি জানিনা। তবে ভাইস চেয়ারম্যান লাইজুর ছেলে একদিন মহিলা কলেজের গেটে শাকিল-সানিকে একবার মারধর করে। পরে আবার লাইজুর ছেলে জোহাকে শাকিল, সানি, আজিম মারে। তখন আমরা লাইজুকে বলেছিলাম আমরা নিজেরা নিজেরা বসে ছেলেদের মিলিয়ে দেই। পরে কি হইছে তা আর জানিনা।
রাজাপুর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও রাজাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আফরোজা আক্তার লাইজু জানান, গত ৭জুলাই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জোহাকে এলোপাথ্যারি পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে শাকিল, সানি, আজিম, রাব্বিসহ কয়েকজন। এ ঘটনার জেরে আমাদের কিছু না জানিয়েই ওরা আবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় গ্রুপের ২জন রক্তাক্ত জখম হয়। এদের মধ্যে ফাহিমের অবস্থা আশঙ্কাজকন।
রাজাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় জানান, কিশোরদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এখনও কোন মামলা হয়নি।দুই পক্ষের দুজন বরিশালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।